জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্য অবহিতকরণ বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মসূচিটি সভাকক্ষ, উপজেলা পরিষদ, জামালপুর সদরে ১৪/১১/২০২২ খ্রি. তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ আবুল হোসেন, চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ, জামালপুর সদর, জামালপুর। বিশেষ অতিথি ছিলেন জনাব আখতারুজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ, জামালপুর সদর, জামালপুর। জনাব ফারজানা ইয়াছমিন, উপজেলা পরিষদ, জামালপুর সদর, জামালপুর। জনাব মো: ফজলুল হক আকন্দ, কাউন্সিলর ০৯ নং ওয়ার্ড ও প্যানেল মেয়র-০১, জামালপুর পৌরসভা, জামালপুর। আলোচক ছিলেন জনাব মো: আশরাফুল আলম, জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার, জামালপুর। উক্ত কর্মসূচিটির সভাপতিত্ব করেন জনাব লিটুস লরেন্স চিরান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জামালপুর সদর, জামালপুর। সঞ্চালনায় ছিলেন জনাব রফিকুল ইসলাম, স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক, জামালপুর সদর, জামালপুর।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনাব সাঈদা আক্তার, কাউন্সিলর ০১ নং ওয়ার্ড, জামালপুর পৌরসভা, জামালপুর। নিরাপদ খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। খাদ্যের নিরাপদতায় বাংলাদেশ নিরাপদ কর্তৃপক্ষ, জামালপুরের পাশাপাশি সকল কাউন্সিলরগণ কাজ করবেন বলে আশা ব্যাক্ত করেন।
জনাব রফিকুল ইসলাম, স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক, জামালপুর সদর জানান যে অনিরাপদ খাদ্যাভাস সকলকে ত্যাগ করতে হবে। স্ট্রিট ফুড, বার্গার ইত্যাদি ফ্যাট জাতীয় খাবারে স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। এসকল খাবার অঙ্গ বিকলাঙ্গসহ শরীরের মারাত্বক ক্ষতি করতে পারে।
জনাব মো: আশরাফুল আলম, জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ বর্ণনা করেন এবং আইন অবমাননার শাস্তিসমূহ উপস্থাপন করেন। খাদ্য অনিরাপদ হওয়ার কারণসমূহ এবং অনিরাপদ খাদ্য গ্রহনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি সমূহ আলোচনা করেন যা সকলের নিরাপদ খাদ্যের প্রতি ভ্রান্ত ধারণাগুলো পরিবর্তিত হয়ে নতুন ধারণার সৃষ্টি করে। আইসক্রিম, ললিপপসহ অনিরাপদ রঙযুক্ত শিশু খাদ্য যা আমরা আমাদের শিশুদের খেতে দেয় তা কতটা ক্ষতিকর তা উনার আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে উঠে। নিরাপদ খাদ্য অফিসারের আলোচনার সময় সকলকে খুবই মনোযোগি শ্রোতা হিসেবে লক্ষ্য করা যায়। নিরাপদ খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও নাতিদীর্ঘ শ্রুতিমধুর ভাষণ দেন। পরিশেষে তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন যে খাবার খেলেই হবে না, খাবারটি নিরাপদ এবং পুষ্টিকর কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
খন্দকার মোহাম্মদ ফজলুল হক, চেয়ারম্যান রশিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ বলেন, আমরা যে খাবর গ্রহণ করছি তা কতটা ক্ষতিকর তা এই আলোচনা সভায় উপস্থিত না থাকলে জানা সম্ভব ছিলোনা। তিনি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেন এবং এই ধরণের কর্মসূচি প্রতিমাসে আয়োজন করার মতামত প্রকাশ করেন।
মো: আব্দুল জলিল, চেয়ারম্যান, ০৯ নং রানাগাছা ইউনিয়ন পরিষদ জানান নিরাপদ খাদ্যের আরো বেশী করে প্রচার করতে হবে। প্রয়োজনে তথ্য অফিসের সহায়তায় প্রচার কার্যক্রম করতে হবে। বিভিন্ন উপজেলায় এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ছোট বাজারে প্রচার করতে হবে। তিনি নিজ ইউনিয়নে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক আলোচনা সভা আয়োজন করার জন্য নিরাপদ খাদ্য অফিসারের কাছে আহ্বান জানান। তিনি আরো জানান রানাগাছা ইউনিয়নে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সকল কার্যক্রমে তিনি পাশে থাকবেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জনাব মোহাম্মদ আবুল হোসেন, চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ, জামালপুর সদর নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি জনবল বাড়ানোর দাবি জানান। মনিটরিং বা মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে যাতে জনগণ এবং ব্যবসায়ীরা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম মনে রাখে। মিডিয়ার মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্যের প্রচার বাড়াতে হবে। নকল পন্য চিহ্নিত করে অসাধু ব্যবসায়ীদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তিনি সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিজ ইউনিয়নে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে কাজ করা এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জামালপুর কার্যালয়কে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের সভাপতি জনাব লিটুস লরেন্স চিরান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জামালপুর সদর, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে জামালপুর সদর উপজেলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে বলেন নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সচেতন হতে হবে এবং নিরলস কাজ করে যেতে হবে। জামালপুর সদর উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক আলোচনা করার বিষয়ে মতামত প্রকাশ করেন। তিনি নিরাপদ খাদ্য অফিসারের সেশনটি খুবই যুক্তিশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্ত করে কর্মসূচিটির সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
উপস্থিত সকলকে প্যাড, কলম এবং নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিভন্ন লিফলেট ও পোষ্টার বিতরণের মাধ্যমে কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস